রমজানে আমাদের হৃদয়কে নরম করি
মুফতি মেনক
এক. আসুন আমরা রমজানের জন্য আমাদের হৃদয়কে নরম করি এবং সর্বশক্তিমানের সাথে আমাদের লিঙ্কটি পুনর্নবীকরণ করি। আমলের জন্য সমৃদ্ধ এই বরকতময় মাসে আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হতে শুরু করুন। ভালোর জন্য নিজেকে পরিবর্তন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হোন আর পুরানো অভ্যাসগুলি ত্যাগ করুন যা জীবনের কোনও উদ্দেশ্য পূরণ করে না।
দুই. এই পবিত্র রমজানে মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে এবং গড়ে তুলতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করুন। বুদ্ধি বিবেচনার সাথে আপনার শব্দ ব্যবহার করুন যার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়তে পারে। সতর্ক থাকুন আপনার মুখ থেকে ভাল ছাড়া আর কিছুই যেন বের হতে না পারে। এর প্রভাব দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়বে।
পূনশ্চ:
এক. ভুল হয়েছে বা কাজ করেনি এমন জিনিসগুলি ছেড়ে দিতে শিখুন। সংক্ষেপে এটাই জীবন। চলতে থাকুন। আপনি যদি কেবলই অতীতে ফিরে তাকাতে থাকেন তবে আপনি কখনই জীবনের এই দৌড়ে জিততে পারবেন না। আপনি যে ভুলগুলি করেছেন তা নির্ধারণ করে না আপনি আজ কে। ইতিবাচক চিন্তা করুন, ভাবুন যে জিনিসগুলি আরও ভাল হবে।
দুই. আপনি যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, সর্বশক্তিমানের সাথে সময় দিয়ে প্রতিদিন শুরু করুন। আপনার দিন জুড়ে আরো আশীর্বাদ দিয়ে আপনাকে পুরস্কৃত করা হবে। আর আপনি যদি কৃতজ্ঞ হতে থাকেন তবে তিনি অবশ্যই আপনাকে আরও দান করবেন।
তিন. বুঝতে চেষ্টা করুন জীবনে কিছুই এলোমেলো নয়। সর্বশক্তিমান বিভিন্ন মানুষ ও পরিস্থিতিকে আপনার পথে নিয়ে আসেন। আপনার যা হওয়া উচিৎ সে ব্যক্তি না হওয়া অবধি আপনার পরীক্ষা চলমান থাকবে। সুতরাং প্রশ্ন করবেন না আমাকে কেন? কারণ প্রত্যেককে তার বিশ্বাসের স্তর অনুযায়ী আলাদাভাবে পরীক্ষা করা হবে।
চার. দ্বন্দ্ব থেকে দূরে থাকুন। শান্তি বেছে নিন। এটি সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ভাল উপায়। চুপচাপ বেছে নিন অথবা যারা সর্বদা কারও বা কোনও কিছুর সাথে সংঘাতে লিপ্ত হবার পথ খুঁজছে তাদের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়াকে বেছে নিন। এমন কোন পরিস্থিতিতে পড়াকে পরোয়া করবেন না যা আপনাকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে নিঃশ্বেষ করে তুলবে।
পাঁচ. যখন আপনি পরিবর্তনকে আলিঙ্গন করেন, তখন কিছু লোক খুশি হবে না। তারা আপনি আগের মতো থাকুন সেটি পছন্দ করে। যার সাথে তারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তারা যা বলে তা নিয়ে চিন্তা করবেন না। আপনার যা করতে হবে তা চালিয়ে যান। এটি আপনার নিজের ভ্রমণ, আপনি যদি সর্বশক্তিমানকে সন্তুষ্ট করতে নিজের জীবনযাপন করে থাকেন, তবে আপনার উদ্বেগের কোন কিছু নেই।
দ্রষ্টব্য:
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেন, যখন তুমি রোজা রাখো, তখন যেন তোমার কান, চোখ ও জিহ্বা মিথ্যা ও পাপ থেকে রোজা রাখে (বিরত থাকে)। সেবককে কষ্ট দেওয়া ছেড়ে দাও। রোজার দিনে তোমার ওপর যেন স্থিতি ও প্রশান্তি প্রকাশ পায়। তোমার রোজা রাখা দিন ও না রাখা দিন যেন এক হয়ে না যায়। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ২/২৭১)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার এ পানাহার পরিত্যাগ করার আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (সহিহ বুখারি : ১৯০৩)
( ধারাবাহিক লেখা….)