মোহাম্মদ সেলিম মিয়া
স্ত্রীর বিদায়ের ২৪ ঘন্টা পার না হতেই অনন্তের পথে যাত্রা করলেন করলেন গুনী নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান। আগের দিন কাঁদলেন প্রিয়তমা স্ত্রীকে হারিয়ে আর পরের দিন ইহকালের মায়াত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমিয়ে নিজেই কাঁদালেন দেশের অগণিত চলচ্চিত্রামোদী, দর্শক, ভক্ত ও স্বজনদের। রাজধানীর উত্তরার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সন্ধ্যা সাতটায় তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন ( ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা অপুর্ব রানা।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৫ বছর। তিনি দুই মেয়ে ও অসংখ্য স্বজন ও গুনগ্রাহি রেখে গেছেন।
‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত “খ্যাত এই গুনী নির্মাতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে চলচ্চিত্রাঙ্গনে। এসময় অনেকেই ছুটে যান হাসপাতালে।
তিনি দীর্ঘদিন যাবত মস্তিষ্কের নানা জটিলতাসহ, উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনিজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। খুব শিগ্রই উন্নত চিকিৎসার জন্য তার দেশের বাইরে যাওয়ার কথা ছিলো। মৃত্যুর কয়েকদিন আগেও স্বপ্নবাজ এই মানুষটি চলচ্চিত্র নিয়ে তার ভবিষ্যৎ স্বপ্নের কথা জানিয়েছিলেন। কথা প্রসঙ্গে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছিলেন এই যাত্রায় বেঁচে গেলে আবারও চলচ্চিত্রের রঙ্গিন ভুবনে দেখাবেন নিজের নতুন সৃষ্টি। সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেলো তার প্রয়াণের মধ্য দিয়ে। এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত দাফন ও জানাযার বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি ।
৭০ দশকের শেষের দিকে সহকারী পরিচালক হিসেবে নিজের ফিল্ম ক্যারিয়ার শুরু করেন সোহানুর রহমান সোহান। শিবলি সাদিকের সহকারী হিসেবে তার চলচ্চিত্র কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ১৯৮৮ সালে “বিশ্বাস অবিশ্বাস ” চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সিনেমার ঝলমলে ভুবনে পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে সোহানুর রহমান সোহানের। মুলত রোমান্টিক ধারার নির্মাতা হিসেবেই তিনি চিত্রপুরিতে সমাদৃত।
সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো- কেয়ামত থেকে কেয়ামত (১৯৯৩), স্বজন (১৯৯৬), আমার ঘর আমার বেহেশত, অনন্ত ভালবাসা (১৯৯৯)।
তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিতে টানা দুবার মহাসচিব এবং দু‘বার সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।