কে রোজা তা জানা জরুরী নয়
সাধারণ মানুষের একটা অভ্যাস আছে, রমজান মাসে রিকশায় চড়লে কথায় কথায় রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করি, মামা! আজ রোজা রেখেছেন?
তো রিকশাওয়ালা যদি সত্যি সত্যি রোজাদার হয়, তাহলে তো বাঁচা গেল। তার একটি নেককাজের সাক্ষী হয়ে গেলাম। কিন্তু রিকশাওয়ালা যদি রোজাদার না হয়, তাহলে জানেন- এই জিজ্ঞাসার মধ্য দিয়ে সম্ভাব্য দুটি পাপের দ্বার খুলে যাচ্ছে!
১. সে যদি বলে, ‘হুম মামা! অনেক কষ্টে রেখেছি। রোজা কি আর না রেখে পারা যায় রে বাবা!’
তাহলে রোজা না রেখেও রাখার কথা বলে মিথ্যার গোনাহে জড়িয়ে গেল।
২. আর যদি বলে, ‘না মামা! রাখতে পারিনি। সারা দিন এই কঠিন কাজ করে কি আর উপোস করা যায়?’
তাহলে সে তার কথায় সত্যবাদী হলেও অন্য আরেকটি পাপ করে বসছে। সেটা হলো, নিজের পাপ অন্যের সামনে প্রকাশ করা। এটাও মারাত্মক গোনাহ।
জিজ্ঞাসা না করলে এসব কিছুই হতো না। আসলে এ ধরনের জিজ্ঞাসায় অনেকেরই ভালো উদ্দেশ্যে থাকে। রিকশাওয়ালা রোজা রেখেছে বললে তাকে ৫-১০ টাকা বাড়িয়ে দেবেন। এতে সে খুশি হবে, সওয়াব পাওয়া যাবে। এটা অবশ্যই শুভ উদ্যোগ।
কথা হলো, এই সওয়ার তো জিজ্ঞেস না করেও পাওয়া যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি ভাড়া দেওয়ার সময় এমনিতেই কিছু টাকা বাড়তি দিয়ে বললেন, এই নাও! আজ ইফতার করে নিয়ো! কোনো ধরনের পূর্ব জিজ্ঞাসা ছাড়া এরকম দান করলে তার মন খুশি হওয়ার পাশাপাশি আরেকটা কাজ হবে। সে যদি রোজাদার না হয়, তাহলে বাড়তি টাকাটুকু তার বিবেকে দংশন করতে থাকবে। ভবিষ্যৎ রোজা পালনের উপদেশ হয়ে যাবে এ দান!