বিনোদন প্রতিবেদক
নানা আয়োজনে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও ছায়ানট সভাপতি ড. সনজীদা খাতুনের নব্বইতম জন্মদিন উদযাপন করেছে সংস্কৃতিকর্মীরা।
মঙ্গলবার ছায়ানট সংস্কৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই আয়োজন সাজানো ছিলো কথামালা, নাচ, গান ও আবৃত্তি দিয়ে।
‘এসো এসো হে তৃঞ্চার জল, কলকল্ ছলছল্-ভেদ করো কঠিনের ত্রুুর বক্ষতল কলকল্ ছলছল রবীন্দ্রনাথের এই গানের মধ্য দিয়েই শুরু হয় এই আয়োজন।
খালি গলায় গানটি পরিবেশন করেন অনুষ্ঠানের মধ্যমনি ছায়ানট সভাপতি ড. সন্জীদা খাতুন।
অনুভুতি প্রকাশে সনজীদা খাতুন বলেন, এভাবে আমার জীবনের নব্বইটি বছর পার হয়ে গেল। আজ ভাবতে বসেছি, জীবনটাকে আমি কী রকম করে সাজাতে চেয়েছিলাম আর বাস্তবে কী হয়েছে। ছেলেবেলায় ইজিচেয়ারের বাতিল হয়ে যাওয়া কাপড় বিছিয়ে নানীর দেখাদেখি নামাজের ভঙ্গি করতাম। আর কিছুই জানা ছিল না বলে মুখে আল্লাহ আল্লাহ বলতে থাকতাম। মোনাজাতে অনেক কিছু চাইতাম আল্লাহর কাছে। কিছুদিন পরেই মনে ধিক্কার এলো নিজের জন্যে এটা ওটা চাইব কেন? ব্যক্তিগত আকাঙখা ছেড়ে অন্য সবার মঙ্গল কামনায় মোনাজাত করতে আরম্ভ করলাম। সেই থেকেই সবার ভালো চাইবার দিকে মন গেল।
তিনি আরো বলেন, ২০০১ অর্থাৎ ১৪০৮ সালের পয়লা বৈশাখে রমনার বটমূলে বোমা হামলার পর সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সুফল নিয়ে আমাদের আত্মসন্তোষ বিরাট ধাক্কা খেল। বোঝা গেল, পূর্ণাঙ্গ মানুষ গড়ে তুলবার উপযোগী শিক্ষার অভাব অতি প্রকট। তখন আঁকা-গড়া, নাচ-গান, আবৃত্তি-অভিনয়ের আনন্দময় শিক্ষার মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ মানুষ তৈরি করবার নতুন আন্দোলন দানা বাঁধে।
অনুষ্ঠানে ‘ভয় হতে তব অভয় মাঝে/ নূতন জনম দাও হে’ গানের সঙ্গে ছিল নৃত্য পরিবেশনা। ‘আনন্দ লোকে মঙ্গলালোকে’ গানের সঙ্গে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে নাচের শিল্পীরা।
এতে একক সংগীত পরিবেশন করেন অভিজিৎ কুন্ডু, ফাহমিদা খাতুন, ইফফাত আরা দেওয়ান, লাইসা আহমদ লিসা, চন্দনা মজুমদার, ফারহানা আক্তার শ্যার্লি, সুমন মজুমদার। আবৃত্তিতে অংশ নেন জহিরুল হক খান। সম্মেলক গান ও নৃত্য পরিবেশন করে ছায়ানটের শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানের আলোচনায় বক্তব্য রাখেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী।