নিজস্ব প্রতিবেদক
আমার বাংলাদেশ পার্টির উদ্যোগে ঐতিহাসিক গণপ্রজাতন্ত্র দিবস ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয় ৭১ চত্বরে। এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জু’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবি পার্টির যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রফেসর এমিরিটাস-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রভাষা বাংলা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর আবুল কাসেম ফজলুল হক; বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মোসাদ্দিক বিল্লাহ আল-মাদানী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, বর্তমানে কোনো দলে প্রকৃত রাজনীতি নেই, রাজনৈতিক দলগুলো মূলত দলাদলির রাজনীতিতে ঢুকে গেছে। রাজনৈতিক বাস্তবতা জনগণের পক্ষে নয়। জনগণ বিশ্বাস করে এই দেশে ভাল কিছু হতে পারে না, এর দায় রাজনীতিবিদদের। মানুষকে জাগানোই এখন বড় রাজনীতি। আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রকাশ্য ঘোষণা দিবস, ১৯৭১ সালে এই দিনে আমরা দেশকে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছি যার মাধ্যমে আমরা মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে সক্ষম হয়েছি। আমরা পাকিস্তানি শক্তিকে পরাজিত করব, এমন একটা প্রতিশ্রুতি নিয়েই ঘোষণা করা হয়েছে স্বাধীনতার। ১৭ই এপ্রিলের সরকার জনগণের মুক্তির জন্য তৈরি হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকার এই শক্তিকে অগ্রাহ্য করে এড়িয়ে যেতে চায়। কিন্তু ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য নিয়ে যেটা যাত্রা শুরু করেছিল, সে উদ্দেশ্যের অনেকটাই অধরা রয়ে গেছে। আমরা যেই উদ্দীপনা থেকে, যেই চেতনা থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলাম, এখন আবার সময় হয়েছে সেই চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির জন্য আরেকটি মুক্তির ঘোষণাপত্র পাঠ করা। ১৭ এপ্রিলকে জাতীয়ভাবে গনপ্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষনা ও পালন করতে হবে ইতিহাসের দায় থেকে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ মোসাদ্দিক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, আমাদের মানুষের মৌলিক অধিকারের রাজনীতি করার কথা ছিল। কিন্তু আমরা দেখছি উন্নয়নের নামে সরকার গরিবের টাকা দিয়ে তার দলীয় লোকদের পকেটের উন্নয়ন করছে। দশ টাকায় চাল খাওয়াবে বলে সেই চাল আশি টাকায় খেতে হচ্ছে। দেশের সাধারণ জনগণ দিন দিন ভুখা নাঙ্গা থাকছে। জনগণের দায়িত্ব কার? কথার রাজনীতি যারা করে বাংলাদেশের মানুষ তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। বিগত নির্বাচনগুলোতে জনগণের ভোটাধিকার হরন করা করেছে। ঘুষের উন্নতি হয়েছে, চুরির উন্নতি হয়েছে, কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবন মানের উন্নতি হয় নাই। আমরা হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলে দিতে চাই, জনগণের জন্য কাজ করুন, না হয় জনগণ রাজপথে নেমে এলে আপনারা জনরোষের কবলে পড়ে পালানোর পথ খুজে পাবেন না।
সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মূলনীতির মাঝে সাম্যের কথা বলা ছিল, পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানের উপর শোষণ নিপিড়ন চালাতো। তাদেরকে নিম্ন শ্রেণির কাজে দায়িত্ব দিত। তাদের জীবন মানের কোনো উন্নয়ন করতো না। আজকে স্বাধীনতার বায়ান্ন বছর পরে এসেও দেখছি মানুষ গায়ে বস্র ছাড়া ঘুরে বেড়ায়, এক বেলা খাবারের জন্য ভিক্ষা করতে হয়, অন্য দিকে রাজনৈতিক লুটপাটের মাধ্যমে জনগণের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। সাম্য প্রতিষ্ঠা করা জনগণের চিন্তার বাহিরে চলে গেছে। আমরা বলছি প্রধানমন্ত্রীর সন্তান যে ধরনের জীবন যাপন করছে একজন সাধারণ মানুষের সন্তানও একই ধরনের জীবনযাপন করবে, এবি পার্টি সেই রাজনীতি করছে। এবি পার্টির হাত ধরে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মূলনীতির বাস্তবায়ন হবে এবং আপনাদের সাথে নিয়েই এবি পার্টি এগিয়ে যাবে। আমরা প্রথম প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সহ অস্থায়ী সরকারের সকল নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধের সকল পর্যায়ের সত্যিকারের সংগঠক, সেক্টর কমান্ডারবৃন্দ ও দেশের সকল নাগরিককে শুভেচ্ছা জানাই এই ঐতিহাসিক দিনে।