সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক
বিবেকানন্দ থিয়েটারের প্রযোজনায় শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চায়ন হলো ভিন্নধারার গল্পের নাটক ‘উত্তরণ”।
সোমবার সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি।
অপূর্ব কুমার কুন্ডু রচিত এই নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন শুভাশীষ দত্ত তন্ময়। নাটকটির কাহিনীতে দেখা যায়,
আমেরিকার বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে স্বামী বিবেকানন্দের প্রদত্ত বক্তৃতার অনেক কথার একটি কথা ছিল, ‘পাপী ! মানুষকে পাপী বলাই সব থেকে বড় পাপ’। পূণ্যের পথে যারা আছেন, পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্র-আর্ন্তজাতিক পরিসরে যারা এগিয়ে আছেন তারা সর্বক্ষেত্রে- সর্বজনীন ভাবে মূল্যায়িত, প্রশংসিত। তারা সকলের কাছে আদৃত। কিন্তু যারা সুযোগের অভাবে, একট সুস্থ-স্বাভাবিক ভরন পোষনের অভাবে কিংবা বাধ্য বাধকতায় পথভ্রষ্ট, বিপথগামী তারাতো সর্বক্ষেত্রে-সর্বজন দ্বারা পরিত্যাক্ত, অচ্যুত, ঘৃনিত এবং অবমূল্যায়িত। অথচ তারাও তো স্বপ্ন দেখে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে যেতে, পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্রের কাছে আদৃত কিংবা একটু বিশুদ্ধ পরিমন্ডলে আর দশজন মানুষের মতো সামাজিক স্বীকৃতি নিয়ে বাঁচতে। এমন একজন মানুষ উত্তরণ যে তার পঙ্কিল জীবন থেকে ঘুরে দাঁড়াতে চায়, প্রচলিত পথ ভ্রষ্ট জীবন থেকে বেরিয়ে আসতে চায়, দুহাত দিয়ে কুয়াশার মতো ঘিরে ধরা অন্ধকারকে সরিয়ে আলোর পথের যাত্রী হতে চায়। কিন্তু মানুষের ভিড়ে, মানুষের নির্ধারিত অভিসম্পাতের মাঝে দাঁড়িয়ে উত্তরণরা কি শেষ পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়াতে পারে? কেউ কি পথ প্রদর্শক হয়ে তাদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবার পথ দেখিয়ে দেয়! উত্তরণদের কি শেষ পর্যন্ত জীবনে উত্তরণ দেখা দেয় এই নিয়েই নাটক উত্তরণ।
বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন-শুভাশীষ দত্ত তন্ময়, শান্তনু সাহা, তারক নাথ দাস, অমিতাভ রাজীব, এস এম মাশফিক আহমেদ, এ আর কিবরিয়া, সুমিত চন্দ্র দাস,হিমেল হিমু, রতন মোহন বিশ্বাস, ফাহতিন মাহতাব হক প্রমুখ।
নাটকটি নিয়ে নাট্যকার অপূর্ব কুমার কুন্ডু বলেন, নাটক উত্তরণ একদল পথভ্রষ্ট মানুষের দিকহীন দিশাহীন পথে পথে পথ চলা। পথভ্রষ্ট মানুষকে চোরা পথের অলি গলি এড়িয়ে মর্যদার রাজপথের যাত্রী হবার অনুপ্রেরনা অনুপ্রাণিত করে নাটকটি।
নির্দেশক শুভাশীষ দত্ত তন্ময় বলেন, গত ২১ জুলাই নাটক উত্তরণের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন দেখে একুশে পদক প্রাপ্ত ও স্বাধীনতার পদক প্রাপ্ত নাট্য ব্যক্তিত্ব মঞ্চ সারথী আতাউর রহমান বলেছিলেন, ‘উত্তরণ নাটকটি সময়োপযোগী। এধরনের নাকট বেশী হওয়া প্রয়োজন। বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় মানবতার যে ক্ষয়িষ্ণুতা আমরা দেখতি পাচ্ছি সেখানে মানবিক মূল্য বোধের যে অনিবার্য প্রয়োজনীয়তা তার বহুলাংশ জাগ্রত করা দাবী রাখে নাটকটি। বিনোদন ও জ্ঞানের সমন্বিত নাটকটির অধিকতর মঞ্চায়ন সেকারণেই প্রয়োজন।