নিজস্ব প্রতিবেদক
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক এক সচিবের সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর আয়ের বৈধ উৎস জানাতে না পারায়, তার বাড়ী এবং ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের দূর্নীতি বিরোধী অভিযানের আওতায় সাবেক এই সচিবের তিনটি বাড়ী এবং একাধিক ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে, দূর্নীতি বিরোধী অভিযানে সামনে আরো বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী সাবেক আমলা ও ব্যবসায়ীর সম্পদ জব্দের প্রক্রিয়া চলছে । যে সাবেক সচিবের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে তার নাম বিডি মিত্র।
তিনি ১৯৮২ ব্যাচের বিসিএস কর্মকর্তা। স্বেচ্ছায় অবসর নেন ২০১৭ সালের ১৯ নভেম্বর। এরপর উত্তর আমেরিকাই তার ঠিকানা। কখনো নিউইয়র্কে কখনো কানাডায় থাকেন। পেনশনের টাকা উত্তোলনের আবেদনে নিজেকে অর্থকষ্টে থাকা গরীব অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন। অথচ তার স্ত্রী রাখি মিত্রের নামে নিউইয়র্কে তিনটি বাড়ী আর কানাডায় দুটি বাড়ীর সন্ধান পাওয়া যায়। ২ মিলিয়ন ডলার নগদ পরিশোধ করে নিউইয়র্কের জ্যামাইকা এবং ফরেস্ট হিলে তিনটি বাড়ী কিনেছিলেন। সে সব বাড়ী জব্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন । কানাডার টরেন্টোতে ৩ মিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার দিয়ে বাড়ী কিনেছেন দুটি।
বিডি মিত্র নিউইয়র্কে নাসির আলী খান পলের কাছ থেকে প্রথম বাড়ীটি কেনেন ২০১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। ঐ বাড়ীর মূল্য ৭৬০,০০০ ডলার (বাংলাদেশী টাকায় ৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা) নগদে ক্রয় করেন। বাড়ীর ঠিকানা ৮৭-৩০ ১৬৯ স্ট্রিট কুইন্স। দ্বিতীয় বাড়ী (৮৫-২৭, ১৬৮ প্লেস, জ্যামাইকা) কেনেন ঐ বছরের ডিসেম্বরে। ঐ বাড়ীর মুল্য ৭৮৫,০০০ ডলার। ঐ অর্থও নগদে পরিশোধ করা হয়। ১১৩,৮১ এভিনিউ কিউ গার্ডেনস ঠিকানার তৃতীয় বাড়ী কেনেন ২০১৮ সালের ১২ জুন। ইয়েলেনা সেডিনার কাছ থেকে ঐ বাড়ী কেনা হয় ৭ লাখ ৭৫ হাজার ডলারে।২০১৭ এর নভেম্বরে অবসর গ্রহনের মাত্র দুমাসের মধ্যে কানাডার টরেন্টোতে কেনেন ১৪ লাখ ডলার (কানাডিয়ান) দিয়ে একটি বাড়ী। সর্বশেষ ২০১৯ সালে টরেন্টোতেই ৯ লাখ কানাডিয়ান ডলার দিয়ে কিনেছেন আরো একটা বাড়ী। বিডি মিত্রের জন্মস্থান হবিগঞ্জ। ১৯৮৬ সালের ২৭ অক্টোবর তিনি সরকারী চাকরীতে যোগ দেন। ২০১২ সালে তদবির করে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে ইকোনমিক মিনিষ্টার পদে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে দেশে এসে তিনি খাদ্য বিভাগে ভারপ্রাপ্ত সচিব হন। চাকরী জীবনে যেখানেই গেছেন সেখানেই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। কিন্তু এসব অভিযোগের পরও তিনি সচিব পর্যন্ত পদোন্নতি পেয়েছেন।যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী তার সেদেশে সম্পদের পরিমান প্রায় ২০০ কোটি টাকা। বিডি মিত্র অধিকাংশ সময়ে নিইইয়র্ক এবং কানাডায় থাকেন। তবে মাঝে মধ্যে দেশে থাকেন। তার বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতির মামলা নেই।