নিজস্ব প্রতিবেদক
মানুষের পেটে ভাত নাই, পছন্দসই সেহেরী ও ইফতার খাওয়ার সামর্থ নাই। এই সরকার জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভোট, ভাত ও জীবনের স্বাধীনতা হরণ করে মুখে স্বাধীনতা আর মুক্তিযুদ্ধকে ঢাল বানিয়ে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। একদিন মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য এদের কঠিন বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে এবি পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা আজ এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভা শেষে স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাতবরণকারী বীর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. আব্দুল ওহাব মিনারের সভাপতিত্বে বিজয় নগরস্থ এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয় একাত্তর চত্বরে বিকেল ৫ টায় এই আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে শেষ হয়।
দলের যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মহসীন মন্টু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব মন্টু বলেন, স্বাধীনতা নিয়ে আমাদের অনেক প্রত্যাশা ছিল। স্বাধীনতার এই দিনে আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ সকল মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদদের শ্রদ্ধা জানাই। আমরা সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চাই। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, আমরা আজ একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। দেশে গণতন্ত্র নাই, মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নাই, খাদ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসার নিরাপত্তা নাই। আজ ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধকে পারিবারিক ইতিহাসে পরিনত করা হয়েছে। বিগত দুইটি নির্বাচনে মানুষের ভোটাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়েছে। এমনকি আওয়ামিলীগের লোকজনও ভোট দিতে পারে নাই। এমন জঘন্য ইতিহাস রচিত হয়েছে এই সরকারের আমলে। এমতাবস্থায় দেশের মানুষকে নিজের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামতে হবে।
এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জু বলেন, দ্রব্যমূল্য ইতিহাসের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। মানুষের কষ্ট নিয়ে সরকারের কোন মাথাব্যথা নাই। মানুষ নিজের পছন্দমত সেহেরী ও ইফতার খেতে পারছেনা। এই সরকার জনগণের সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভোট, ভাত ও জীবনের স্বাধীনতা হরণ করে স্বাধীনতার অঙ্গীকারকে ভুলুণ্ঠিত করেছে। মুখে মুখে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিলেও মুক্তিযুদ্ধকে ঢাল বানিয়ে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য একদিন এদের কঠিন বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ডা. আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, স্বাধীনতা দিবস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ব্যবসা করা হচ্ছে। আর ক্ষমতাসীন দল এই কাজটি চাতুরতার সাথে করতে সিদ্ধহস্ত। নৈশভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে বিরোধী দলের উপর পাশবিক জুলুম নির্যাতন চালিয়ে, বাক স্বাধীনতা সহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার হরণ করে জনগনকে ভুয়া উন্নতির গল্প শোনাচ্ছে এই সরকার। বর্ননাহীন মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার উপর স্যাংশন দেয় আমেরিকা। লজ্জা নেই, এই সরকারের অপমান বোধের অনুভূতিও ভোঁতা হয়ে গেছে। আজ বাংলাদেশের আপামর জনগণ ও মেহনতী মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করার জন্য একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। আমার বাংলাদেশ পার্টি স্বাধীনতাকামী দেশপ্রেমিক জনগণকে সাথে নিয়ে এই দাবি আদায় করে ছাড়বে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক বি.এম. নাজমুল হক, যুব পার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, যুব নেত্রী সুলতানা রাজিয়া, রাশিদা আক্তার মিতু সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতৃবৃন্দ। সভায় অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, অফিস সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এফসিএ, যুব পার্টির সদস্য সচিব শাহাদাত উল্লাহ টুটুল, সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমান সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভা শেষে দোয়া করা হয়, দোয়া পরিচালনা করেন হাফেজ রাশেদুল ইসলাম।