নিজস্ব প্রতিবেদক
বরেণ্য সাংবাদিক, প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবি,বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব কলামিস্ট,শতাধিকের কমবেশি গ্রন্থের সুনামধন্য লেখক,প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবি,পরিবেশ সাংবাদিকতার প্রবক্তা,মাহফুজ উল্লাহর মৃত্যু নেই। কারণ তিনি অনেক কিছুই রেখে গেছেন। তিনি কাউকেই হার্ড করে কোনো ধরনের কোনো কথা বা বিরূপ আচার আচরণ করেননি। তিনি ছিলেন উদার হৃদয়ের মানবিক মানুষও খোদা প্রদত্ত একজন বাগ্মী সত্যবাদী সৎ সাহসী বীর সৈনিক। তাঁর মৃত্যুতে আমরা লক্ষ করেছি দল-মত নির্বিশেষে সর্বস্তরে সর্বসাধারণ মানুষকে শোকাভিভূত করেছে চলে যাওয়া ।
বর্তমান সময়ে দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতির উদ্ভব উদঘাটনের সৃষ্টি বিভক্তিতে বিভক্ত সর্বক্ষেত্রে রাজনীতি,সমাজনীতি,পেশা, এমনকি পরিশেষে মানুষের সর্বশেষ সাহায্যের স্থান আমরা আমাদের সাংবাদিকরাও এখন ভাগে ভাগে বিভক্ত হয়েছেন। এই বিভক্ত সমাজের মধ্যে তিনি মাহফুজ উল্লাহ ছিলেন একজন সার্বজনীনভাবে সর্বস্তরের নিকট আপোষহীন অকুতোভয় দুঃসাহসী সাহসের বাতিঘরের পথনির্দেশক হিসেবে দেশও জাতির মানবকল্যাণে তিনি যে সমস্ত কাজ করে অবদান হিসেবে রেখে গেছেন,সেই অবদানকে অস্বীকার বা খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তার রেখে যাওয়া সকল কাজের অবদানকে যদি আমরা যথাযথ সম্মান মর্যাদার সাথে মূল্যায়িত করতে পারি তাহলে মাহফুজ উল্লাহর পরিশ্রমের ফসলগুলো আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা হিসেবে কাজে আসবে।
সেই সাথে বর্তমানও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে যথাযথভাবে তার রেখে যাওয়া সেই সকল কাজগুলো তুলে ধরতে হবে এবং রক্ষা করার কাজে সেই দায়িত্ব আমাদেরই সকলের বলে মন্তব্য করেন ” মাহফুজ উল্লাহ ” স্মৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি,জ্ঞান সৃজনশীল প্রকাশকও কলামিস্ট মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার ।
মরহুম মাহফুজ উল্লাহ স্মৃতি পরিষদ তাঁহার মৃত্যুর পর থেকে প্রতিবছরের মতো এবারও সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনদিন ব্যাপী গৃহীত কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। কর্মসূচি পালনের মধ্যে আজ (২৯ শে এপ্রিল শনিবার-) বিকেলে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে মাহফুজ উল্লাহর মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ করা হয়। সেই সাথে তাহার কবরের পাশে কিছুক্ষণ সময় দাঁড়িয়ে এই আলেমগণের উপস্থিতিতে পবিত্র কালামে কোরআন তেলাওয়াত সহ দোয়া দুরুদ পাঠ করে তাহার রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়।
স্মৃতি পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদারের উপস্থিতিতে মোনাজাত পরিচালনা করেন
দারুসসালাম হোছাইনিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার পরিচালক, বিশিষ্ট আলেম মাওলানা ইব্রাহিম খলিল। উক্ত সময় উপস্থিত ছিলেন,সংগঠক এডভোকেট মোহাম্মদ স্বপ্নীল সরকার,হাফেজ মাওলানা মুহিউদ্দীন,মুফতি মাওলানা একরামুল হক,মাওলানা আবদুল আজিজ, হাফেজ মাওলানা আবুল হাসান জসিম, সংগঠনের সদস্য,সুহিন ইরফান প্রমুখ। মোনাজাতের পরেই স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে মাহফুজ উল্লাহর অমর স্মৃতি প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। আজকের এই কর্মসূচি পালনের মধ্যে দিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনদিন ব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় দিন আগামীকাল রোববার,পবিত্র কোরআন খতম,সেই সাথে এতিম বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী, গরীবও দূরস্থ অসহায় কিছু লোকজন এবং পথশিশু বাচ্চাদের জন্য দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে ।
উল্লেখ প্রখ্যাত এই বুদ্ধিজীবি, বরণ্য সাংবাদিক,পরিবেশ সাংবাদিকতার প্রবক্তা,মিডিয়া টক-শো ব্যক্তিত্ব প্রিয়মুখ মাহফুজ উল্লাহ ৬৯বছর বয়সে ( ২৭শে এপ্রিল ২০১৯-) সালে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ৫মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন।
অলিদ তালুকদার বলেন ” মাহফুজ উল্লাহ শুধুমাত্র বাংলাদেশের খ্যাতিমান সাংবাদিকই ছিলেন না,তিনি একাধারে লেখক,কলামিস্ট, টেলিভিশন ব্যত্তিত্বও পরিবেশবিদ ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটর ছিলেন। এছাড়াও নোয়াখালী জার্নালিস্ট ফোরামের উপদেষ্টা ছিলেন। বাংলাদেশে তিনিই প্রথম পরিবেশ সাংবাদিকতা শুরু করেন।
মাহফুজ উল্লাহ ১৯৫০ সালের ১০ মার্চ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় গোপালপুর ইউনিয়নের সম্ভান্ত্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন দেশের এই আলোকময় খ্যাতিমান সাংবাদিক। তার পিতার নাম হাবিবুল্লাহ, মাতার নাম ফয়জুননিসা বেগম। ভারতীয় উপমহাদেশে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত মুজাফফর আহমেদের দৌহিত্র হলেন মাহফুজ উল্লাহ এবং তাহার অপর বড়ভাই প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ,অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ ( তিনি জীবিত-) আমরা তাহার দীর্ঘায়ু নেক হায়াত কামনা করি ।
অলিদ তালুকদার আরও বলেন -কর্মজীবনের মধ্যে তিনি মাহফুজ উল্লাহ’র সবচেয়ে বেশি সময়টি মৃত্যুর পুর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত দেশও জাতির কল্যাণে কাজ করে গেছেন। তার সবচেয়ে বড়গুণ ছিল দেশের যে কোনো প্রেক্ষাপটে তিনি সাথে সাথে কলমের মাধ্যমে আপোষহীন অকুতোভয় দুঃসাহসী সাহসিকতায় কলমযুদ্ধে তাৎক্ষণিক জবাব দিতেন। এতে লক্ষ্য করে দেখা যায় তার মধ্যে কোনো ভয়ভীতি প্রদর্শন নেই। সাধারণ জীবন-যাপনকারী দেশপ্রেমিক সাহসের বাতিঘরের এই বরেণ্য সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ তিনি মানবতাবাদী, পরিবেশের অকৃম বন্ধুও অসাম্প্রদায়িক চেতনার মুহূর্ত ধারক ও বাহক হিসেবে ছিলেন সাহসী এক বাগ্মী মহা পুরুষের অন্যতম পুরুষ।
প্রকৃতির পরিশীলিত একজন মহা মানব মানুষ ছিলেন এই বরেণ্য সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ। তিনি বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের যে অমিত অনাদি গৌরব সেই-ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতি তাঁহার গভীর শ্রদ্ধাশীল ছিলেন তিনি মাহফুজ উল্লাহ। তার জীবনদ্দশায় দেশ জীবনই হয়ে উঠে তাঁর আত্মজীবন এবং দেশপ্রেমই হয়ে উঠেছে বিশ্বজনীন বিশ্বপ্রেম।
অলিদ তালুকদার আরও বলেন মাহফুজ উল্লাহর” আগামী বছর মৃত্যুবার্ষিকীর আগেই আমাদের এই স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে তাঁহার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর তথ্য উপাত্তনির্ভর ডকুমেন্ট মহামূল্যবান গ্রন্থ গুলো খুঁজেখুঁজে বের করে,সংরক্ষিত করে রাখা হবে। সেই সাথে তার মূল্যবান বইগুলো পুনরায় প্রকাশিত করার জন্য আমরা এখন থেকেই সে উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেছি। তারি সাথে মাহফুজ উল্লাহ’র নামেই গবেষণাধর্মী শিক্ষা ও সেবামূলক কার্যক্রম হিসেবে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করার জন্য আমরা আমাদের এই স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ নেয়া হয়েছে ।
বার্তা প্রেরকঃ
এডভোকেট মোহাম্মদ স্বপ্নীল সরকার -: প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ” মাহফুজ উল্লাহ স্মৃতি পরিষদ –