অনলাইন ডেস্ক
মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, প্রতিবাদীগান, শোভাযাত্রা ও জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুলেল শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি ‘এবি পার্টি’। বিজয় দিবসের আলোচনায় এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ বলেন; ১৬ ডিসেম্বরে উদিত হওয়া বিজয়ের সূর্য ৭ জানুয়ারী দেশ ধ্বংসের কলংক নিয়ে ডুবে যাবে কিনা সেটা আজ বড় প্রশ্ন! গণতন্ত্র ও স্বাধীকারের জন্য বৈষম্যের বিরুদ্ধে যে মুক্তিযুদ্ধ তার অঙ্গীকার ধ্বংসের জন্য নেতৃবৃন্দ আওয়ামীলীগ সরকারকে দায়ী করেন।
বিজয় দিবস-২০২৩ উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা আজ সকাল ৯ টায় বিজয় নগরস্থ এবি পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয়-৭১ চত্বরে শুরু হয়। উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের স্বাগত বক্তব্য এবং নেতা-কর্মী ও শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে শহীদদের উদ্দেশ্য নিবেদিত ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ডাঃ মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আনোয়ার সাদাত টুটুল, যুবপার্টির আহবায়ক এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন ও সহকারী সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আব্বাস ইসলাম খান নোমান প্রমূখ।
আলোচনা সভা ও প্রতিবাদী গানের অনুষ্ঠান শেষ করে এবি পার্টির নেতা ও কর্মীরা পুস্পস্তবক, জাতীয় পতাকা ও নানা রংয়ের ফেস্টুন সুসজ্জিত শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রাটি প্রথমে পবব্রজে পল্টন থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পরবর্তীতে তা মটর শভাযাত্রায় রূপ নেয়। বেলা ২ টা নাগাদ মোটর শোভাযাত্রাটি সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পৌঁছায়। স্মৃতিসৌধে নেতা-কর্মীরা শ্লোগান সহকারে ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে স্মৃতিসৌধের পুস্পবেদীতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায়। সেখানে শহীদদের স্বপ্নের অধিকার ভিত্তিক বাংলাদেশ পুণর্গঠনের লক্ষ্যে তারা শপথবাক্য পাঠ করেন।
এর আগে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেজর অব. মিনার বলেন, আজ সাধারণ মানুষ বাজার করে খেতে পারছেনা, অথচ তারা লুটের টাকা দিয়ে উৎসবে মেতেছে। তিনি সরকারকে লক্ষ্য করে বলেন, অবিলম্বে এই পাতানো নির্বাচন বন্ধ করুন, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন।
স্বাগত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার বাহান্ন বছর আমরা উদযাপন করছি পরাধীনতার শৃঙ্খল নিয়ে। এখনো আমাদের সংগ্রাম করতে হচ্ছে ভাতের অধিকার, ভোটের অধিকার, শিক্ষা চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকার নিয়ে, যা অত্যান্ত লজ্জা ও পরিতাপের। আজকের বিজয় দিবসে আমাদের অঙ্গীকার আমরা এবি পার্টির নেতৃত্বে এই পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে দেশকে মুক্ত করবোই ইনশাআল্লাহ।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে ড. নকীব নসুরুল্লাহ বলেন, এবি পার্টির লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি দেখে আমি আশান্বিত। স্বাধীনতার মুল ঘোষণা পত্র সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার থেকে আজও যোজন যোজন দূরে। এটা চলতে পারেনা। এবি পার্টি যেহেতু গঠিতই হয়েছে স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রকে সামনে রেখে, আমি আশা করি এবি পার্টি জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে মানুষের ভোটের অধিকার সহ মৌলিক অধিকার সমুহ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে দেশকে একটি কল্যান রাষ্ট্রে পরিনত করবে।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, স্বাধীনতার পূর্বেও এই দেশে রাস্তা ঘাট স্কুল, কলেজ সবই ছিলো কিন্তু বাংলার মানুষের অধিকার ছিলোনা। যার জন্যই লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছিলেন, এদেশের মানুষকে মুক্ত করার সংগ্রাম করেছিলেন। আজ আবার মানুষ তার ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম করছে, জেল খাটছে, জীবন দিচ্ছে। আমাদের এই আন্দোলন চলছে, চলবে। ১৬ ডিসেম্বরে উদিত হওয়া বিজয়ের সূর্য ৭ জানুয়ারী দেশ ধ্বংসের কলংক নিয়ে ডুবে যাবে কিনা সে আশংকা ব্যক্ত করে তিনি বলেন;
বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার সহ মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা না-হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে ইনশাআল্লাহ।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, সভা সমাবেশের অধিকার বন্ধ করে জারী করে কোন প্রজ্ঞাপন আমরা মানিনা। বাকশালীরা আজ বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ পাঁচটি ব্যাংককে দেওলিয়া করে সিঙ্গাপুর, কানাডায় আস্তানা গেড়েছে। মানুষের সকল অধিকার হরণ করেছে তারা। আজ বিএনপি সহ সকল বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে। বিজয়ের বায়ান্ন বছর পরে দেশের মানুষ পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াবে এটা আমরা হতে দিতে পারিনা।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর হোসেন, এম আমজাদ খান, যুবপার্টির সদস্য সচিব শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, যুগ্ম সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, মাসুদ জমাদ্দার রানা, সুলতানা রাজিয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হালিম খোকন, যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, কেফায়েত হোসেন তানভীর, মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব ফিরোজ কবির, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম নান্নু, রুনা হোসাইন, শাহিনুর আক্তার শীলা, সুমাইয়া শারমিন ফারহানা, আমিরুল ইসলাম নুর, সেলিম খান, আব্দুর রব জামিল, রিপন মাহমুদ, মশিউর রহমান মিলু, ছাত্রপক্ষের আহবায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, সদস্যসচিব আশরাফুল ইসলাম নির্ঝর, পল্টন থানার আহবায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, রনি মোল্লা, সিএম আরিফ সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।