মোহাম্মদ সেলিম মিয়া
বড় ভাই ও ভাবির ব্যক্তিগত সময় কাটানোর মুহূর্তে চলে আসতো সৎ ছোট ভাই সৌরভ (৭)। প্রায় সময় লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতো তাদের ব্যক্তিগত মুহূর্ত। এতে বিব্রত ও বিরক্ত হতো বড় ভাই সানি মিয়া ও তার স্ত্রী আয়শা আক্তার। পরে শাশুড়ির পরামর্শে স্ত্রী আয়শাকে নিয়ে ছোট ভাই সৌরভকে গলাটিপে হত্যা করে লাশ একটি ড্রামে ভরে খাটের নিচে রেখে দেয় বড় ভাই সানি। রাতে সুযোগ বুঝে স্ত্রী আয়শার সহযোগিতায় বাড়ির পেছনে পরিত্যাক্ত জঙ্গলে ফেলে দেয় লাশ।
নারায়ণগঞ্জে নিখোঁজের দুইদিন পর ৭ বছরের শিশু সৌরভের লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে জেলা পুলিশ কার্যলয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যার রহস্য উদঘাটন শেষে এসব তথ্য জানান নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বন্দর উপজেলার কুঁড়িপাড়া এলাকার বাড়ির পাশের জঙ্গল থেকে ৭ বছরের শিশু সৌরভের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বন্দর থানায় নিহত শিশু সৌরভের মা কুলসুম বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় প্রথমে জিজ্ঞাবাসাবেদর জন্য শিশু সৌরভের সৎ ভাই সানি মিয়া (১৯), তার স্ত্রী আয়শা আক্তার (১৮) ও শাশুড়ি শিল্পী বেগমকে (৩৫) আটক করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা আরও জানান, মঙ্গলবার রাতে নিখোঁজ হয় শিশু সৌরভ। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত জঙ্গল সৌরভের লাশ পড়ে থাকতে দেখে লোকজন। দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শিশু সৌরভের বাবা সালাউদ্দিন ও মা কুলসুম বেগম সন্দেহ প্রকাশ করে জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞবাসাদের জন্য আটক ওই তিনজন জড়িত থাকতে পারে। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে জানায়, সৎ বড় ভাই সানি ও তার স্ত্রী আয়শা আক্তারের বিবাহিত জীবনে ব্যক্তিগত মুহূর্তের সময় উত্যাক্ত করার কারণে শিশু সৌরভকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে প্রথমে তারা লাশ খাটের নিচে রেখে দেয়। পরে রাতে লাশটি নিয়ে বাড়ির পেছনে পরিত্যক্ত জঙ্গলে ফেলে রাখে।
নিহত শিশুর পিতা সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, আমার সন্তানের ওরা এভাবে হত্যা করবে আমি কখনো কল্পনা করতে পারিনি। আমরা এই খুনের বিচার চাই, ফাঁসি চাই।