বিএনপি পথ হারিয়ে দিশেহারা পথিকের মত বেসামাল বক্তব্য দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (২৪ মে) সকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা জনগণের প্রতিনিধি। জনগণের ইচ্ছায় আমরা দেশ শাসন করছি। বিএনপি পথ হারিয়ে দিশেহারা পথিকের মত বেসামাল বক্তব্য দিচ্ছে। তাদের শক্তি কমে এসেছে ক্রমান্বয়ে নেতিবাচক রাজনীতির জন্য।
এই সরকারের আমলে কোন নিরীহ লোক হয়রানি, জেল জুলুমের শিকার হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন আপনাদের দল প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশকে হত্যা করেছে, সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ করেছে, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করেছে, পুলিশ হাসপাতালে হামলা করেছেন। এইসব অপরাধের সাথে যারা জড়িত তারা তো অপরাধী। তাদেরকে বিএনপি হিসেবে আটক করা হয়নি, আটক করা হয়েছে খুন, আগুন সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে।
বিএনপি মহাসচিবের সমালোচনা করে কাদের বলেন, কয়দিন আগে চাপাইনবাবগঞ্জে একজন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আটকের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরে জানা গেলো তিনি অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অথচ ফখরুল সাহেব তার পক্ষে এক বিরাট বিবৃতি দিয়ে বসলেন। খুনি, সন্ত্রাস ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সাথে বিএনপি ক্ষমতায় থাকার যে প্র্যাক্টিস (চর্চা) তারা এখনো তা করে যাচ্ছে। এখানে কোন ছাড় নেই।
পৃথিবীতে এই বছর ৬৪টি দেশে নির্বাচন হচ্ছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তার মধ্যে যুক্তরাজ্যও আছে। তাদের নির্বাচন জুলাইয়ের ৪ তারিখ। আফ্রিকার অনেক দেশে ইতিমধ্যে নির্বাচন হয়ে গেছে। অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ভোটার টার্নআউট আমি বলবো সন্তোষজনক। বিএনপির ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিবিসি বলেছলো ৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। এটা নির্বাচন কমিশন থেকে ২১ শতাংশ দেখিয়েছে। এবার তার ডাবল। এটা কে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে বলবেন কম!
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন থেকে সিইসি বলেছেন ভোট পড়েছে ৩৬ শতাংশ -এর বেশি। আর এবার দ্বিতীয় ধাপে পড়েছে ৩৭ শতাংশের বেশি। তার মানে এই বার এক শতাংশ বেশি।
বিশিষ্ট সাহিত্যিক শরৎচন্দ্রের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, শরৎচন্দ্রের কথা, মানুষের শক্তি যখন কমে আসে তখন তার মুখে বিষ উগ্র হয়ে নেমে আসে। বিএনপির মুখের বিষ এতই উগ্র, ফেসবুকের যে অপপ্রচার, টিকটকে আমাদের যে নোংরাভাবে আক্রমণ করে এটা কি সম্ভব কোন গণতান্ত্রিক দেশে? প্রধানমন্ত্রী কে যেভাবে আক্রমণ করে! এসব করার পরেও বলে সরকার জুলুম করছে, নির্যাতন করছে। এমন কোন বাজে কথা নেই, তাদের নেতারা প্রতিদিন উচ্চারণ করে না। সেটার জন্য তো কারো গলা টিপে ধরা হয়নি। কাজেই এসব অবান্তর বক্তব্যের কোন মূল্য নেই।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতা অর্জন করেছে, ক্ষমতা দখল করেনি মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, এটা হলো ক্ষমতা অর্জন, আর বিএনপি বলছে ক্ষমতা দখল। জনগণের ভোটে আমরা ক্ষমতা অর্জন করেছি, এটা আমাদের এচিভমেন্ট। এটা আমাদের অর্জন, ক্ষমতা দখল নয়। মনে হয় যেনো বন্দুকে নল উচিয়ে তাদের নেতা যেভাবে ক্ষমতা দখল করেছে, নির্বাচন করে যেনো আমরা ক্ষমতা সেভাবেই দখল করেছি। সারা দুনিয়া জানে। যে কারণে নির্বাচনের আগে দুনিয়ার অনেকেই সমালোচনা করেছে কিন্তু নির্বাচনের পরে! বাইডেনের চিঠিটা আমরা তাদের পড়তে বলবো। যে কারণেই হউক, তিনিও এক সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।