1. mahadihasaninc@gmail.com : admin :
  2. hossenmuktar26@gmail.com : Muktar hammed : Muktar hammed
ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত ফারুক পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত - dailybanglakhabor24.com
  • December 6, 2024, 6:32 am

ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত ফারুক পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত

  • Update Time : মঙ্গলবার, মে ১৬, ২০২৩ | দুপুর ১২:৩২
  • 78 Time View

মোহাম্মদ সেলিম মিয়া

কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও বিএফডিসিতে ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত হয়ে গাজীপুরের কালীগঞ্জের দক্ষিণ সোম টিওরীর পাঠানবাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন চিত্রনায়ক, সাংসদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর পাঠান ফারুক।
মঙ্গলবার সকাল আটটায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মরদেহ পৌঁছানোর পর মরদেহ নেওয়া হয় উত্তরার বাসভবনে। স্বজনদের আহাজারি ও শোকের মাতমে সেখানকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে। এরপর দুপুর পৌণে ১২টায় মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে সেখানে শেষ শ্রদ্ধায় সর্বস্তরের নাগরিকরা।
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের পক্ষে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন লে. কর্নেল জাহাঙ্গীর আলম, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা জানান মেজর জেনারেল কবির আহমেদ। স্পিকারের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান সংসদ সচিবালয়ের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস এম এম নাঈম রহমান।
আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আরও শ্রদ্ধা জানান সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, ফেরদৌস, মিশা সওদাগর, নিপুণ, জায়েদ খান প্রমুখ।
শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, চিত্রনায়ক ফারুক ছিলেন বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি অবিচল ও অনড়। তার আদর্শ থেকে কখনো একচুলও ছাড় দেননি। ফারুকের বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র আমার কাছে ভালো লেগেছে। তার লাইফটা ছিল কালারফুল। একদিকে তিনি ভালো নায়ক ছিলেন, অন্যদিকে ছিলেন ভালো রাজনীতিবিদ।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, মানবিক গুণাবলির সব গুণই তার ছিল। তার সঙ্গে আমাদের পরিবারের একটি বন্ধন ছিল। জাতীয় সংসদে আমরা পাশাপাশি আসনে বসতাম। দুই বছর ধরে আসনটি শূন্য। দুই বছর ধরে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। আমরা ভেবেছিলাম, তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন।
ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন পাঠান বলেন, আমি সবাইকে বলতে চাই, আপনারা আমার বাবার প্রতি কোনো দুঃখ রাখবেন না। উনি যদি কারো মনে কোনো কষ্ট দিয়ে থাকেন, উনাকে মাফ করে দেবেন। আপনারা কোনো দাবি রাখবেন না। আপনারা উনার জন্য দোয়া করবেন।
সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শ্রদ্ধা জানায় মহানগর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। শহিদ মিনারের শ্রদ্ধাঞ্জলী শেষে মরদেহ নেওয়া হয় ফারুকের দীর্ঘদিনের কর্মস্থল তার প্রিয় প্রাঙ্গণ বিএফডিসিতে। সেখানে সহকর্মী ও সহশিল্পীরা তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানায়। শ্রদ্ধাঞ্জলী শেষে এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাবের সামনে দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
এফডিসির খতিবের ইমামতিতে এই জানাযায় অংশ নেন- পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, অভিনেতা আলমগীর, ডিপজল, মিশা সওদাগর, ওমর সানী, রুবেল, ফেরদৌস, নীরব, কায়েস আরজু প্রমুখ।
ফারুককে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এফডিসিতে ছুটে আসেন অভিনেত্রী সুজাতা আজিম, রোজিনা, অঞ্জনা, নিপুন, নাসরিন,কণ্ঠশিল্পী রফিকুল আলম, এসডি রুবেল প্রমুখ।
বিএফডিসিতে শ্রদ্ধাঞ্জলীর পর মরদেহবাহি অ্যাম্বুলেন্স নেওয়া হয় চ্যানেল আইতে। সেখানে শ্রদ্ধানিবেদন শেষে অনুষ্ঠিত হয় তৃতীয় জানাযা। চ্যানেল আইয়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও এতে অংশ নেন নায়ক শাকিব খান।
জানাযায় অংশ নিয়ে শাকিব খান বলেন, ফারুক ভাই যতদিন সুস্থ ছিলেন, সবসময় ওনার স্নেহে আমাকে আগলে রেখেছিলেন। আমার চলচ্চিত্রের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর তিনি। অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমার কোনও সিনেমার পোস্টার রিলিজ হলে, কোথাও কিছু দেখলে খুব উৎসাহ দিতেন। অনেক বড় মনের মানুষ ছিলেন। শুধু একজন কিংবদন্তি অভিনেতাই নন, একজন সফল মানুষ ফারুক ভাই।
এরপর মরদেহ নেওয়া হয় গুলশানের আজাদ মসজিদে। সেখানে বাদ আছর চতুর্থ জানাযা শেষে মরদেহ নিয়ে স্বজনরা রওনা দেয় গাজীরের কালীগঞ্জের দক্ষিণ সোম টিওরীর পাঠান বাড়ির উদ্দেশ্যে। সেখানে পঞ্চম ও শেষ জানাযা শেষে রাত নয়টায় পাঠানবাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হয় প্রয়াত এই নায়ককে।
১৫ মে সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ড এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ তিনি অসংখ্য স্বজন ও গুনগ্রাহি রেখে গেছেন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে সর্বশেষ ২০২১ সালে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে যান তিনি। তখন তার রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর সেই সংক্রমণ মস্তিস্কেও ছড়িয়ে পড়ে। শারীরিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়ার পর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category