মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার
নব্বই দশকের দর্শকনন্দিত জুটি নাঈম-শাবনাজ। বাংলা সিনেমার অন্যতম আদর্শ তারকা দম্পতিও তারা। যাদেরকে এখনো সিনেমার পর্দায় দেখার জন্য প্রতিনিয়ত দর্শক আগ্রহ প্রকাশ করেন। জীবনে চলার পথে কখনো কোথাও নাঈম-শাবনাজ দর্শকের মুখোমুখি হলে দর্শকরা অনুরোধ করেন তারা যেন আবার সিনেমায় ফিরেন।
দর্শকের এই অকৃত্রিম ভালোবাসার মাঝে নিজেদেরকে প্রতিনিয়তই নতুন করে আবিষ্কার করেন এই তারকা দম্পতি। কিন্তু নাঈম-শাবনাজ জানান, আপাতত সিনেমায় ফেরার কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের। দুজনই এখন বর্তমান জীবন নিয়ে ব্যস্ত। তাদের দুই সন্তান নামিরা ও মাহাদিয়ার জীবন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
পর্দায় তাদের প্রেম-ভালোবাসা দেখে দর্শকরা মুগ্ধ হয়েছেন। অনেকগুলো সফল সিনেমায় তারা একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। সেই কাজ থেকে কাছে আসা, ভালোবাসা; তারপর বিয়ে। এই সমীকরণ নব্বই দশকের দর্শকনন্দিত জুটি নাঈম-শাবনাজের।
আজ (৫ অক্টোবর) বিবাহিত জীবনের ২৯ বছর পেরিয়ে ৩০ বছরে পা দিলেন এ তারকা দম্পতি। ১৯৯৪ সালের ৩০ জানুয়ারি নাঈমের বাবা খাজা মুরাদ ইন্তেকাল করায় মানসিকভাবে ভীষণ ভেঙে পড়েন এই নায়ক। ১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর শাবনাজকে বিয়ে করেন। তবে তাদের বিবাহবার্ষিকী ঘিরে বিশেষ কোনো আয়োজন নেই বলে জানালেন শাবনাজ। ঘরোয়াভাবেই দিনটি কাটাচ্ছেন।
আলহামদুলিল্লাহ, একসাথে পথ চলার ২৯টি বছর পার করলাম। সুখ, দুঃখ, আনন্দ, ত্যাগ ও ভালোবাসা মিলেমিশে কাটানো সম্ভব হয়েছে, একই মন মানসিকতা ও আল্লাহ রহমতের কারণে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে নেক হেদায়েত দান করুন, আমিন। বিবাহিত জীবনের ২৯ বছর ঠিক এভাবেই ব্যাখা করলেন এই তারকা জুটি।
শফিউল আলম পরিচালিত ‘বিষের বাঁশি’ সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়েই নাঈম ও শাবনাজের প্রেমের সম্পর্কের গভীরতা বাড়ে। এ সিনেমায় অভিনয় ও দাম্পত্য জীবন প্রসঙ্গে নাঈম বলেন, ‘এ সিনেমায় শাবনাজের চরিত্রের নাম ছিল ময়না। তখন থেকে আজ অবধি তাকে আমি ময়না বলেই ডাকি। আল্লাহর রহমতে আমরা বেশ ভালো আছি।’
শাবনাজ বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমত নাঈমের মতো পরিপূর্ণ একজন মানুষকে আমি জীবন সঙ্গী হিসেবে পেয়েছি। আমরা সুন্দর একটি জীবন গড়েছি, সুখী একটি পরিবার গড়েছি। বাকি জীবনও যাতে এভাবেই কাটাতে পারি- এটিই চাওয়া।’
গত ৪ অক্টোবর ছিল নাঈম-শাবনাজ অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘চাঁদনী’র মুক্তির দিন। ১৯৯১ সালর ৪ অক্টোবর এহতেশামুর রহমান পরিচালিত ‘চাঁদনী’ মুক্তি পায়। সিনেমাতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে দেশীয় চলচ্চিত্রে নাঈম-শাবনাজ জুটির অভিষেক হয়।
এরপর একে একে এই জুটি দর্শককে উপহার দেন ‘দিল’, ‘সোনিয়া’, ‘চোখে চোখে’, ‘বিষের বাঁশি’, ‘অনুতপ্ত’, ‘টাকার অহংকার’, ‘সাক্ষাৎ’, ‘জিদ’ সহ আরো বেশকিছু জনপ্রিয় চলচ্চিত্র।
সর্বশেষ তারা দুজন ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’ চলচ্চিত্রে জুটি হয়ে অভিনয় করেছিলেন। নাঈম সর্বশেষ ‘মেয়েরাও মাস্তান’ এবং শাবনাজ সর্বশেষ ‘ডাক্তার বাড়ি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।