নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এই বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। আপনি এবং আপনার দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করবেন কিনা তা ভেবে দেখতে পারে। কিন্তু আপনার অধীনে এ দেশে কোন নির্বাচন হবে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ভয় পাইছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঠেকানোর জন্য বিদেশ সফর শুরু করেছেন। কিন্তু কোনো লাভ হবে না।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপার্সন ‘খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে’ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাটি আয়োজন করে ইয়ুথ ফোরাম।
দুদু বলেন, দেশ আজ ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে। দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতীয় সংসদ থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত নির্বাচন ব্যবস্থায় ধ্বংস হয়েছে। সকল পেশাজীবী সংগঠনের স্বাভাবিকভাবে নির্বাচন হয় না, এমনকি মসজিদ কমিটি নির্বাচনের দলীয়করণ হয়।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, মানুষের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। সরকারের বাইরে কোন পত্রিকায়, ইলেকট্রনিক মিডিয়া নাই। সম্প্রতি দৈনিক দিনকাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তার আগে আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, দিগন্ত টেলিভিশন, চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বে গণতন্ত্রের প্রতীক হচ্ছে খালেদা জিয়া। বলা হয় বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে খেয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি- যে টাকার কথা বলা হয়েছে সেই টাকা বিদেশ থেকে এতিমের টাকা হিসেবে আসেনি। জিয়ার নামে প্রতিষ্ঠান করার জন্য কুয়েতি সরকার টাকা দিয়েছিলো। সেই টাকা এখন ব্যাংকে কয়েকগুন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, রাজনীতিবীদসহ সরকারের মিডিয়া এই টাকার মিথ্যা বয়ান জাতি ও বিশ্ববাসীকে দিয়েছে।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৬-১৭ বছর দেশে থাকেন না। আইন করে তার কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। তার বক্তব্য সংবাদপত্রে বা টেলিভিশনে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তারেক রহমানের নিয়ে আওয়ামী লীগ ভয় পেয়েছে। যার কারণে তার মুখোমুখি হওয়ার সাহস সরকারের নাই। তার নামে আপনারা আতঙ্কিত। সে দেশে আসলে আপনার কীভাবে থাকবেন, কী করবেন, কীভাবে চলবেন এই আতঙ্কে তারেক রহমানকে কোনঠাসা করে ও বিদেশে থাকতে বাধ্য করছেন।
সাবেক এ ছাত্র নেতা বলেন, তারেক রহমানের স্ত্রী হওয়ার কারণে মেধাবী ডাক্তার ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। শুধু মামলা নয়, এমন কোন কুৎসা নাই যা আপনার তার বিরুদ্ধে করেন নাই।
কৃষকদলের সাবেক এই আহবায়ক বলেন, সংবিধানের তত্ত্ববোধক সরকার ছিল, সেই আইনটা আপনার পরিবর্তন করেছেন। ৯০ এর গণভোটের মাধ্যমে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনেছিল এদেশে মানুষ। প্রয়োজনে আবারো গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এদেশের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। এ ব্যাপারে কোন আপস নাই।
কৃষকদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আপনারা (আওয়ামী লীগ) বলছেন বিএনপি’র সঙ্গে আলোচনা করবেন না, কিন্তুু বিএনপি আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করবেতো? কোথায় পেয়েছেন যে বিএনপি আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করবে? শুধু বিএনপি নয়, কোন বিরোধী দলই প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বাস করে না।
বিএনপি যুগ্নমহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, আওয়ামী লীগ জোড় করে ক্ষমতা দখল করে জনগণের উপর জগদ্দল পাথরের উপর চেপে বসেছে। দেশে গণতন্ত্র নাই, ভোটাধিকার নাই, মানুষের বাক স্বাধীনতা নাই। বিরোধী দলকে নিচিহ্ন করার জন্য সব ধরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, রাজনীতিকভাবে পরাজিত হয়ে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন বিদেশে ধরনা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, ফোরামের উপদেষ্টা এম নাজমুল হাসান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগাঠনিক সম্পাদক লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, কৃষকদরের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম, জাতীয়াতাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি আমির হোসেন বাদসা, মৎসজীবি দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সারাজী, দেশ বাঁচাও-মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন। সঞ্চলনায় ছিলেন শরিফুল ইসলাম শরিফ।