1. mahadihasaninc@gmail.com : admin :
  2. hossenmuktar26@gmail.com : Muktar hammed : Muktar hammed
জনস্বাস্থ্য রোজায় সুষম খাদ্যাভ্যাস যে কারণে জরুরি - dailybanglakhabor24.com
  • July 9, 2024, 3:02 pm

জনস্বাস্থ্য রোজায় সুষম খাদ্যাভ্যাস যে কারণে জরুরি

  • Update Time : মঙ্গলবার, এপ্রিল ৪, ২০২৩ | রাত ৯:০২
  • 71 Time View

 

মো. আনোয়ার খসরু পারভেজ

 

সাধারণত আমরা দিনে তিনবেলা খাবার খেয়ে থাকি। কিন্তু রোজার সময়ে খাবারের এই পরিচিত নিয়ম পাল্টে যায়। ভোররাতে সেহরি খেয়ে রোজা শুরু হয়, শেষ হয় ইফতার করার মাধ্যমে।

সুষম খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে পবিত্র রমজান মাসের সিয়াম সাধনা আমাদের জন্য অত্যন্ত স্বাস্থ্যবান্ধব হতে হবে। কারণ রোজা পালনের মাধ্যমে ‌আমাদের রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ করে‌ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ‌ডিটক্সিফিকেশনের মাধ্যমে রোজা পালনের সময় আমাদের শরীরের চর্বিতে ফ্যাট ও সঞ্চিত টক্সিন ধ্বংস হয়‌। রোজা আমাদের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ডিএনএ ড্যামেজ প্রতিরোধ করে‌। অন্ত্রের ও খাদ্যনালির সমস্যা নিরাময় করে।

রমজান মাসে প্রয়োজন সুষম খাদ্যাভ্যাস ও স্বাভাবিক খাবার : রোজায় দিনে যেহেতু তিনবারের বদলে দু’বার খাবার গ্রহণ করা হয়, তাই ওই দুই বেলা খাবার যেন সারাদিনের চালিকাশক্তি দিতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। ভোররাতের খাবারে প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি জাতীয় খাবারের পাশাপাশি কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাবার থাকা প্রয়োজন। সঙ্গে যদি কিছু সবজি ও ফল থাকে তাহলে তা আরও ভালো। এত সকালে খাওয়া অনেক সময় বেশ কষ্টকর হতে পারে। তাহলে প্রথম কয়েক দিন শুরুতে অল্প করে হলেও খেতে হবে । শরীর দ্রুত এই অভ্যাসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। সাধারণত চতুর্থ বা পঞ্চম দিনের মধ্যে খাবার গ্রহণের অভ্যাস হয়ে যায়।

সেহরি ও ইফতার যথেষ্ট পুষ্টিকর ও পরিমিত ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার যেমন– লাল আটা, বাদাম, বিনস, শস্য, ছোলা, ডাল ইত্যাদি খেতে হবে। এগুলো হজম হয় আস্তে আস্তে, তাই অনেক সময় পর ক্ষুধা লাগে। অন্যান্য মাসের মতো এই রমজানে সবজি ও ফল খেতে হবে নিয়মমতোই। না হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হবে নিত্যসঙ্গী। দুধ খেতে পারেন প্রতিদিন। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় না ভুগতে চাইলে ইসবগুল খেতে হবে দুধের সঙ্গে। কাঁচা ছোলা খাওয়া ভালো। তবে তেল দিয়ে ভুনা করে খাওয়া বাদ দিতে পারেন। চা, কফির মাত্রা কম হতে হবে। তা না হলে পানিশূন্যতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ঘুমের সমস্যা হতে পারে। সহজপাচ্য খাবার, ঠান্ডা খাবার যেমন– দই, চিড়া খেতে হবে। তা হলে সারাদিন রোজা রাখা নাজুক পাকস্থলী খাবার হজম করতে পারবে। শরীর খুব বেশি দুর্বল লাগলে ইফতারের পর ডাবের পানি বা খাবার স্যালাইন খেতে পারেন। ডায়াবেটিক রোগীরা পরিমিত পরিমাণে ডাক্তারের নির্দেশমতো খেতে হবে।

রোজায় কী ধরনের খাবার বর্জন করা উচিত: অতিরিক্ত তেলে ভাজা ও মসলাযুক্ত খাবার, যা আমাদের পরিপাক ক্রিয়ায় বাধা দেয়। যেমন ছোলা ভুনা, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, হালিম, বিরিয়ানি– এসব খাবার সম্ভব হলে বাদ দিন। ওজন কমাতে চাইলে শর্করা কম খান, আমিষ ও সবজি দিয়ে পেট ভরালে ভালো। মাংস বেশি না খেয়ে মাছ খেতে হবে। অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার, যা আমাদের শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এগুলো অবশ্যই বর্জনীয়। কোমল পানীয় বর্জন করুন। এটা ঘুমের সমস্যা, এসিডিটি, আলসার ইত্যাদির কারণ। রোজার মাসে জাংক ফুড বাদ দিলে, ব্যালান্স ডায়েট খেলে দেহের অতিরিক্ত মেদ, টক্সিন কমবে, ফিটনেস বাড়বে। সারাদিন না খাওয়ায় এবং দিনের বেলা কাজের মাধ্যমে দেহের অতিরিক্ত মেদ কমে।

অনেক মানুষ রোজার প্রথম কয়েক দিন মাথা ব্যথায় ভোগেন। এটি সাধারণত পানিশূন্যতার কারণে হয়ে থাকে। এই গরমে অন্তত ওজন-উচ্চতাভেদে দৈনিক ৮ থেকে ১২ গ্লাস পানি না খেলে হজমের সমস্যা হয়। লক্ষ্য হলো, স্বাভাবিক সময়ে আমরা যে পরিমাণ পানি পান করে থাকি, রোজার সময় একই পরিমাণ পানি সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত পান করা। অর্থাৎ ওই সময়ের মধ্যে কিছুক্ষণ পরপর অল্প পানি পান করা। অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার বর্জন করতে হবে, যা আমাদের শরীরের পানিস্বল্পতা রোধে সহায়তা করবে।

ইফতারে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ না করা: ইফতারে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ না করতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। যেহেতু রোজার সময় আমরা সারাদিন না খেয়ে থাকি, ইফতারের সময় আমাদের অনেকেরই মনে হতে পারে, সারাদিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে অনেক খেতে হবে। বিশেষত বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে খাওয়ার সময় এই প্রবণতা আমাদের মধ্যে বেশি কাজ করে। রোজা ভাঙা একটি আনন্দঘন মুহূর্ত, যখন মানুষ বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে খেতে বসে। কিন্তু ইফতারে আমরা অনেকেই যা খাই তা অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত। এভাবে দেখা যায় যে, বছরের অন্য সময়ের চেয়ে বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার আমরা ইফতারেই খেয়ে ফেলি। যদি সপ্তাহে একদিন কিছুটা বেশি খাওয়া হয়, তাহলে সমস্যা নেই। কিন্তু রমজান মাসে দেখা যায়, প্রতিদিনই আমরা অতিরিক্ত ইফতার খেয়ে ফেলি। তাই কার্যত সারাদিন না খেয়ে থাকলেও, দিন শেষে দেখা যায় আমরা অন্য সময়ের চেয়ে বেশি খেয়ে ফেলছি। পানি দিয়ে ইফতার শুরু করুন; এর পর খেজুর, কিছু ফল ও অন্যান্য খাবার খান।

ড. মো আনোয়ার খসরু পারভেজ: অধ্যাপক ও গবেষক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
khasru73@jauniv.edu

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category