1. mahadihasaninc@gmail.com : admin :
  2. hossenmuktar26@gmail.com : Muktar hammed : Muktar hammed
গুহা সম্পর্কিত সুরার শানে নজুল: ৫ - dailybanglakhabor24.com
  • November 6, 2024, 9:16 pm

গুহা সম্পর্কিত সুরার শানে নজুল: ৫

  • Update Time : শনিবার, এপ্রিল ৮, ২০২৩ | রাত ৩:১৬
  • 79 Time View

লেখা:ইবনে ইসহাক ||

 

নবুয়তের কাহিনি: ১৪

এরপর এল গল্পের কথা। তারা রাসুলকে (সা.) কিছু যুবকের কথা জিজ্ঞেস করেছিল। আল্লাহ্‌ বলেন: ‘তুমি কি মনে করো যে গুহা ও রকিমের অধিবাসীরা আমার অন্যতম বিস্ময়কর নিদর্শন।’ অর্থাৎ, মানুষের কাছে আমি যেসব নিদর্শন পাঠিয়েছি, তাতে আরও বিস্ময়কর বস্ত্ত আছে। তারপর আল্লাহ্‌ বলেন, ‘যুবকেরা গুহায় আশ্রয় নেওয়ার পর বলল, “হে আমাদের প্রতিপালক, তুমি নিজে থেকে আমাদের অনুগ্রহ দান করো এবং আমাদের কাজে-কর্মে আমাদের পরিচালিত করো।”’ অতঃপর আমি তাদের গুহায় কয়েক বছর ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে দিয়েছিলাম। পরে আমি তাদের জাগ্রত করলাম এই কথা জানার জন্য যে দুই দলের মধ্যে কোনটি তাদের অবস্থানকাল সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারে।’ তারপর তিনি (আল্লাহ্‌) বলেন, ‘আমি তোমার কাছে তার যথার্থ বর্ণনা দিচ্ছি। তারা ছিল কয়েকজন যুবক, তারা তাদের প্রতিপালকের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, আমি তাদের সৎ পথে চলার তওফিক বৃদ্ধি করে দিয়েছিলাম। আমি তাদের মনের জোর বাড়িয়ে দিয়েছিলাম।

তারা তখন উঠে দাঁড়াল, বলল, “আমাদের প্রতিপালক আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর প্রতিপালক। আমরা কখনো তাঁর পরিবর্তে অন্য কোনো উপাস্যের পূজা করব না, যদি করি তবে তা অত্যন্ত ঈশ্বর বিগর্হিত কাজ হবে।” তার মানে, তারা আমার সঙ্গে অন্য কোনো কিছুর শরিক করেনি, যেমন করে তোমরা না জেনেশুনে করেছ। তাদের এই স্বজাতিগণ তাঁর (আল্লাহ্‌র) পরিবর্তে অনেক উপাস্য (ইলাহ) গ্রহণ করেছে, যদিও এসব ইলাহ সম্পর্কে তারা কোনো স্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করতে পারে না। তাহলে যে আল্লাহ্‌ সম্পর্কে মিথ্যা উদ্ভাবন করে তার চেয়ে অধিক সীমা লঙ্ঘনকারী আর কে হতে পারে? তোমরা যখন ওদের থেকে আলাদা হয়ে গেলে, ওরা আল্লাহ্‌র পরিবর্তে যাদের ইবাদত করে তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, তখন তোমরা গুহায় আশ্রয় গ্রহণ করো। তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্য তাঁর দয়া বিস্তার করবেন এবং তিনি তোমাদের সমস্ত প্রচেষ্টা সাফল্যমণ্ডিত করবেন। তোমরা দেখে থাকবে, সূর্য উদয়কালে সূর্য তাদের গুহার দক্ষিণ দিকে হেলে থাকে এবং অস্তকালে তাদের গুহা অতিক্রম করে বাম দিক দিয়ে। আর তারা থাকে গুহার প্রশস্ত চত্বরে।

‘এ হলো আল্লাহ্‌র বহু নিদর্শনের অন্যতম’—অর্থাৎ সেই গ্রন্েথর লোক যারা তাদের কাহিনি জানে, যারা তাদের ইতিহাসের বিবরণ প্রদানের মাধ্যমে তোমার নবুয়তের সত্যতা যাচাই করার জন্য ওই লোকগুলোকে তোমাকে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে বলল, তাদের জন্য এই প্রমাণ হাজির করা হলো। আল্লাহ্‌ যাকে সৎ পথে পরিচালিত করেন, তিনিই সৎপথপ্রাপ্ত, আর যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার অন্য কোনো পথপ্রদর্শনকারী অভিভাবক থাকে না। এবং তোমার মনে হবে তারা ছিল জাগ্রত কিন্তু আসলে ছিল নিদ্রিত। আমি ওদের পার্শ্ব পরিবর্তন করাতাম ডানে কিংবা বামে এবং ওদের কুকুর ছিল গুহাদ্বারে সম্মুখের দুই পা প্রসারিত করে। তুমি যদি ভালো করে ওদের পর্যবেক্ষণ করতে, তাহলে পেছন ফিরে পলায়ন করতে এবং তাদের ভয়ে আতঙ্কিত হতে, এখান থেকে ‘যারা নিজেদের মধ্যে তর্ক করছিল, তারা বলল,’ এই পর্যন্ত ভাষ্যের উদ্দেশ্য ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি-সম্পন্ন ওই সব মানুষকে পরিচিত করানো। ‘তারা বলতে লাগল—চলো আমরা এক সৌধ নির্মাণ করি’—আমরা মানে ইহুদি র‌্যাবাইবৃন্দ, যারা এসব প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার পরামর্শ দিয়েছিল। তারা ছিল তিনজন, তাদের কুকুরটি ছিল চতুর্থ জন। আবার কেউ কেউ বলে, তারা ছিল পাঁচজন এবং ষষ্ঠজন ছিল তাদের কুকুরটি। সবই ওরা বলল অনুমানের ওপর নির্ভর করে।’ তার অর্থ বিষয়টি সম্পর্কে তাদের কোনো জ্ঞানই ছিল না। আবার তারা বলে সাতজন, তাদের কুকুর ছিল অষ্টম জন।

বলুন, আমার প্রতিপালকই তাদের সংখ্যা ভালো জানেন। তাদের প্রকৃত সংখ্যা কেবল কতিপয় লোক জানে, সুতরাং সাধারণ আলোচনা ব্যতীত এ দিয়ে তাদের সঙ্গে এক করতে যেয়ো না, অর্থাৎ তাদের কাছে অহংকার প্রকাশ করবে না।’ এবং এদের কাউকে ওইসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করো না। কারণ ওদের কারও এসব বিষয়ে কোনো জ্ঞান নেই। এবং কখনো কোনো বিষয়ে ‘আল্লাহ্‌ যদি চান’ না বলে ‘আমি কাল এটা করব’ এমন কথা বলবে না। যদি ভুলে যাও, তবে তোমার প্রভুকে স্মরণ করবে, বলবে ‘সম্ভবত আমার প্রভু আমাকে গুহাবাসীর বিবরণ জানার চেয়েও বড় সত্যের নিকটতর পথ নির্দেশ করবেন।’ এর অর্থ হলো, ওদের কথার জবাবে বেফাঁস কোনো কথা বলবে না। যদি বলো, কালকে এর উত্তর দেব, তাহলে তার সঙ্গে আল্লাহ্‌র ইচ্ছার শর্ত যোগ করবে। আর যদি তাকে ভুলে যাও, তাহলে তাঁর কথা সঙ্গে সঙ্গে স্মরণ করবে এবং বলবে তারা আমাকে যে কথা জিজ্ঞেস করছে আল্লাহ্‌ হয়তো তার চেয়েও ভালো অনেক তথ্য আমাকে জানাবেন আমাকে সুপরিচালিত করার জন্য। কারণ, তোমরা তো জানো না, আমি এ নিয়ে কী করছি এখন। ‘এবং তারা গুহার মধ্যে ছিল তিন শ বছর এবং আরও নয় বছর।’ অর্থাৎ, এ কথা তারা বলবে। ‘তুমি বলো, তারা কত দিন ছিল, তা আল্লাহ্‌ ভালো জানেন। আকাশ ও পৃথিবীর অজ্ঞাত রহস্য তাঁর জানা। তিনি কত সুন্দর দ্রষ্টা ও শ্রোতা। তিনি ব্যতীত তাদের কোনো অভিভাবক নেই এবং তিনি কাউকে নিজ কতৃ‌র্ত্বের অংশীদার করেন না।’ অর্থাৎ, তারা যেসব বিষয় জানতে চাচ্ছে, তার কোনোটাই তার অজানা নেই।

অনুবাদ: শহীদ আখন্দ

প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ‘সিরাতে রাসুলুল্লাহ (সা.)’ বই থেকে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category