মোহাম্মদ সেলিম মিয়া
তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডাবের দাম। ফলে গ্রীষ্মের গরমে ক্লান্ত শরীরে প্রশান্তি এনে দিতে পারলেও অনেক মানুষই ডাবের পানিতে তৃষ্ণা মেটাতে পারছে না।
বিক্রেতাদের ভাষ্য, মূল্যবৃদ্ধির কারণে ডাব বিক্রি কমে গেছে। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, দাম বেশি হলেও গরমে বাধ্য হয়ে ডাবের পানির স্বাদ নিতে হচ্ছে।
সোমবার দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে একটি ডাবের আড়তে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন শ্রমিক খুচরা ডাব ব্যবসায়ী আড়তে ঘুমিয়ে আছেন।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাতে বরিশাল, নোয়াখালী, খুলনা অঞ্চল থেকে ডাব আসবে কারওয়ান বাজারে। তাদের একজন হাসিম। তিনি খুচরা ডাব ব্যবসায়ী। হাসিম বলেন, আগে চার থেকে ছয় হাজার টাকায় ১০০ ডাব পাওয়া যেত। এখন সেই ডাবের দাম ৮ থেকে ১২ হাজার টাকা। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০টি ডাব বিক্রি হয়।
১৫-১৬ বছর ধরে ব্যবসা করেন মো. সালাম। তিনি বলেন, বর্তমানে ডাবের দাম বাড়তি হওয়ায় বেচাকেনা কমে গেছে। দাম যখন কম ছিল তখন বেচাকেনা বেশি হতো, এখন প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০টি ডাব বিক্রি হয়।
তিনি বলেন, বেশি দাম হওয়ায় মানুষ কম খায়।
শরীফ নামের এক ক্রেতা বলেন, ডাবের দাম অনেক বেশি। তারপরও বাধ্য হয়ে ডাব কিনতে হচ্ছে।
গুলিস্তান পীর ইয়েমানী মার্কেটের সামনে ডাব ও লেবুর শরবত বিক্রি করেন সবুজ নামের একজন। তিনি বলেন, দুই ধরনের ডাব বিক্রি করছি। এক প্রকারের দাম ১৫০ টাকা, অন্যটার দাম ১২০ টাকা। আগে যে ডাবের দাম ১০০ টাকা ছিল সেই ডাব এখন ১৫০ টাকা। আর ৮০ টাকারটা ১২০ টাকা।
তিনি আরও বলেন, যে হারে গরম পড়েছে সে অনুযায়ী ডাব বিক্রি হয় না। দিনে গড়ে তিন থেকে চারটা ডাব বিক্রি করতে পারি। তবে সন্ধার পরে বিক্রি একটু বেশি হয়।
টিকাটুলী মোড়ে ডাব বিক্রেতা জাকির হোসেন। সরেজমিনে দেখা যায় বিক্রেতা নিজেই ডাব খাচ্ছেন। জাকির জানান, এ গরমে দাঁড়িয়ে ডাব বিক্রি করতে গিয়ে শরীর থেকে প্রচুর ঘাম ঝরে। তাই দিনে নিজেই দুটা থেকে তিনটি ডাব খাই।
কেমন বিক্রি জানতে চাইলে তিনি জানান, এখন ২০০ ডাব বিক্রি হয়। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথম কারণ চড়া মূল্য। আগে ডাব বিক্রি করতাম ৬০ থেকে ১০০ টাকা। এখন কেনা বেশি পড়ে, তাই বিক্রি করতে হচ্ছে একশ টাকা থেকে দেড়শ টাকায়। এ গরমে অনেকে ডাব খেতে আসেন। যাদের খাওয়ার সামর্থ্য আছে তারা খায়, আবার অনেকে দাম শুনে চলে যায়।
ডাব বিক্রেতা ইকবাল বলেন, সারাদিনে বিক্রি কম। তবে ইফতারের আগের এক-দেড় ঘণ্টা ভালোই বিক্রি হয়। সবাই ঘরে পার্সেল নিয়া যায়। তবে যে গরম সে অনুযায়ী বেচাবিক্রি খুবই কম।