নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, গতকাল (সোমবার) দেখলাম তারেক রহমানের নামে তথাকথিত বিশিষ্টজনেরা নানারকম কথা বলছেন। আসলে তাদের কোনো পরিচয়ই নেই। এরা আওয়ামী লীগার। কোনো ভদ্রলোক আওয়ামী লীগ করে না। যারা ভদ্র তারা কখনো এই দল করতে পারে না, চলে আসতে বাধ্য হন। বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন- বিএনপি নাকি খুনের রাজনীতি শুরু করেছে। আরে আওয়ামী লীগ যখন খুনের রাজনীতি শুরু করে- তখনতো বিএনপির জন্মই হয়নি। তিনি বলেন, খুনের রাজনীতি দেখেছি ’৭৪-৭৫ সালে। শাহজাহানপুরে আমার সামনে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনকে ধরে নিয়ে যায় এসপি মাহবুব, সার্জেন্ট কুদ্দুস, সার্জেন্ট কিবরিয়া। এদের টিম লিডার ছিলো এসপি মাহবুব। আবুল হোসেনকে আর পাওয়া যায়নি। সে ঘটনার সাক্ষী হিসেবে এখনো আমি বেঁচে আছি। ’৭২ থেকে ৭৫ সালে ত্রিশ হাজার যুবকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে আওয়ামী লীগের হাত।
গতকাল বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, রমনা ও শাহজাহানপুর থানা বিএনপির উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু এবং ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর মোড় ঘুরে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এছাড়াও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন থানায় মহানগর বিএনপি নেতারা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
সমাবেশ চলাকালে জেলখানায় আটক অবস্থায় মারা যাওয়া ১৯নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আবুল বাশারের লাশ জানাযার জন্য নয়াপল্টনে নিয়ে আসা হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, দলের স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি কখনই খুনের রাজনীতি করেনি। বরং শহীদ জিয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে দেশ অনেক ভালো অবস্থানে গিয়েছিলো। এদেশ তখন বিশ্বের কাছে ‘ইমাজিন টাইগার’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলো। চোর-বাটপার ছিলো না। আজকে সেই বাংলাদেশকে বলা হচ্ছে লুটেরাদের রাষ্ট্র।
তিনি বলেন, মাঝখানে কয়েকদিন নেতাকর্মীদের উপর অন্যায় অবিচার জেল জুলুম বন্ধ ছিল। কি কারণে বন্ধ ছিল তা জানি না। এখন এসব আবারো শুরু হয়েছে। জীবিত অবস্থায় গ্রেপ্তার হচ্ছেন, আর মৃত বের হচ্ছেন। আমাদের কর্মী আবুল বাশার, ইদ্রিস মন্ডলকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো। আর লম্বা লম্বা কথা বলেন, আমরা খুনি রাজনীতি করি না। আপনারা খুনের রাজনীতি দিয়ে শুরু করেছেন এই রাজনীতি শেষ করবেন। এ সরকারকে সরানোর জন্য, দেশে গণতন্ত্র কায়েমের জন্য যতটুকু যাওয়া প্রয়োজন- বিএনপি নেতাকর্মীরা ততটুকুই যাবে।
মির্জা আব্বাস বলেন, নতুন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিছুদিন যাবত সরকারী কর্মকর্তাদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে- তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নন, এরা আওয়ামী লীগের চাকর-বাকর। তারা ফরমায়েশী কথা বলছেন। ফরমায়েশি রায় দিচ্ছেন। বিএনপি নেতাকর্মীরা জেল-মৃত্যুকে ভয় পায় না। সারাদেশে পোশাকি সন্ত্রাস চলছে। জনগণের টাকায় বেতন নিয়ে জনগণের উপরেই অত্যাচারের স্টিমরোলার চালাচ্ছেন।