নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস : এক সোনালীতম অধ্যায়
বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার, মাসিক মদীনা সম্পাদক ডক্টর আহমেদ বদরুদ্দীন খান বলেছেন, বদরের যুদ্ধ ছিল আত্মরক্ষাথের্, সত্যের পক্ষে, নিপীড়িতদের পক্ষে, মানবকল্যাণের নিমিত্তে। এ যুদ্ধের মাধ্যমে মুসলিমরা সংখ্যায় অনেক কম হয়েও মক্কার কাফির শক্তিকে পরাজিত করে বিজয়ের সূচনা করেছিল। এ যুদ্ধে সত্য—মিথ্যার পার্থক্য সূচিত হয়ে যায়। এ জন্য এই যুদ্ধকে সত্য—মিথ্যার পার্থক্যকারী যুদ্ধ বলা হয়।
রবিবার (৯ এপ্রিল) বিকেল চারটায় পল্টনের গণ স্বাস্থ্য মিলনায়তন ঐতিহাসিক বদর দিবস উপলক্ষে জাতীয় ফোরাম কেন্দ্রীয় সংসদ আয়োজিত “বদর দিবসের শিক্ষা ও আমাদের করণীয়”— শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বদর অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শিক্ষা দেয়। মুসলিম বিশ্বের সকল সঙ্কট মোকাবেলায় বদর যুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে হবে। বদরের চেতনায় সকল দুর্নীতি দুঃশাসন ও অনাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ইসরাইল মানবতার জন্য ক্যান্সার তুল্য। পবিত্র মাহে রমজানে আল—আকসায় নিরস্ত্র মুসলিমদের ওপর হামলা মানবতাবিরোধী অপরাধ। সন্ত্রাসী ইসরাইলের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বকে বদরের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
জাতীয় জনতা ফোরামের সদস্য সচিব এডভোকেট মোহাম্মদ স্বপ্নীল সরকারের সঞ্চালনায় ও সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদারের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন মাসিক মদীনা সম্পাদক ডক্টর আহমেদ বদরুদ্দীন খান, আল ফিকাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শায়েখ মুফতি মাহবুবুর রহমান বিন নুরি, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, জাতীয় সংহতি মঞ্চের সমন্বয়ক মাওলানা কেএম আশরাফুল হক, মাওলানা ইব্রাহিম খলিল, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক সুহিন ইরফান, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, আজ সারা বিশ্বে ইসলামের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে অপপ্রচার করা হচ্ছে। ইসলামের সংস্কৃতি সমূহকে টার্গেট করে আঘাত করা হচ্ছে। বাংলাদেশেও একটি মহল বিভিন্নভাবে ইসলামকে আঘাত করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। বদরের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের মোকাবেলা করতে হবে।
মুফতি মাহবুবুর রহমান বিননুরি বলেন, বদর যুদ্ধ থেকে শিক্ষা নেয়ার প্রয়োজন থাকবে সব যুগে। দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমজান শুক্রবার সংঘটিত বদর যুদ্ধের তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, সর্বশক্তিমান আল্লাহ অনুগত বান্দাদের সবসময় সাহায্য করেন এবং তিনি অহঙ্কারীদের অহঙ্কার চূর্ণ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার বলেন, ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধের মাধ্যমে মক্কার ইসলামের দুশমন পৌত্তিলিকদের বিরুদ্ধে ইসলামের প্রথম বিজয় সূচিত হয়েছে। সে যুদ্ধে মুসলিম মুজাহিদদের সংখ্যা কম হওয়া সত্ত্বেও মহান আল্লাহ হযরত জিবরাঈল (আ.) সহ ফেরেশতা পাঠিয়ে মুসলমানদের মদদ যুগিয়েছে। বর্তমান মুসলমানরা বদরের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিশ্ব মুসলিমের ওপর নির্যাতন চালাতে কেউ সাহস পাবেনা।
সভাপতির বক্তব্যে অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার আরও বলেন – সর্বাবস্থায় আল্লাহর সাহায্য কামনা করা, আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের বদরের এই বিজয়ের কথা স্বরণ করে দিয়েছেন যে, সংখ্যায় কম হওয়া সত্ত্বেও বদর প্রান্তরে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের বিজয় ও সফলতা দিয়েছেন। বদর যুদ্ধের সবচেয়ে বড় শিক্ষণীয় বিষয় ছিল, সব কিছুর জন্য সবার উপরে মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করা । এই বদর যুদ্ধ প্রমাণ করে সংখ্যা ও যুদ্ধ সরঞ্জামের কমবেশি হওয়া বিজয়ের মাপকাঠি নয়। বরং মহান আল্লাহর ওপর দৃঢ় ঈমান ও নির্ভরতা হলো বিজয়ের মুল হাতিয়ার ।