ডেস্ক রিপোর্ট
প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ ছিলেন একাধারে একজন শিক্ষাবিদ, লেখক, সমাজ চিন্তক ও সংস্কারক। তিনি উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম প্রিন্সিপাল। বাঙালি মুসলমান সমাজে শিক্ষার আলো জ্বালাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি। প্রতিষ্ঠা করেছেন- ‘ভূঞাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়’, ‘ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’, ‘করটিয়া জুনিয়র গার্লস মাদ্রাসা ও ভূঞাপুর কলেজ’। দায়িত্ব পালন করেছেন ‘করটিয়া সরকারি সাদ’ত’ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল হিসেবে।
দীর্ঘকাল ইংরেজদের পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে বের হবার স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলনে (১৯২০-১৯২২) সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইব্রাহীম খাঁ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। পরবর্তীকালে তিনি একাধিকবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বিভিন্ন লেখায় মুসলিম সমাজের পুনর্জাগরণের কথা বলেছেন। বিশেষ করে ঊনবিংশ শতকের শেষার্ধে এসে বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে নবজাগরণের প্রেরণা সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। তাঁর স্মৃতিকথা বাতায়ন সমকালের মুসলিম সমাজের একটি বিশ্বস্ত দলিল হিসেবে বিবেচিত।
১৯৭৮ সালের ২৯ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন। দুঃখের বিষয় হল এই মহান মনীষী দারুণভাবে উপেক্ষিত। চর্চা করা হয় না প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁকে। তার নামে প্রতিষ্ঠিত কলেজেও রাখা হয়নি তার রচনা সংগ্রহ।
তাঁর স্মৃতি ও চর্চা জারি রাখতে ইসলামী বার্তাকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ। ড. আখন্দ বলেন, “ইব্রাহিম খাঁ বলতেন, ‘মুসলিম সমাজের অগ্রগতি উন্নয়নই হচ্ছে আমার তপস্যা। লেখালেখি গবেষণাই হচ্ছে আমার তপস্যা।‘ এই তপস্যার কারণেই তিনি আমাদের কাছে এত স্মরণীয় এবং বরণীয়। এরকম একজন রাজনীতিবীদ, একজন লেখক, একজন সমাজ সংস্কারক, একজন সমাজ চিন্তক – তার মত মানুষ সত্যিই বাংলার ইতিহাসে বিরল। তাকে আমাদের ঘরে ঘরে পৌছে দেয়া দরকার। তাকে নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার।“